সুনামগঞ্জ , শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ , ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মাছ বাজারে প্রতারণার ফাঁদে ক্রেতারা বালুপাথর মহালের ইজারা বন্ধ নয়, ইজারা প্রথার বাতিল চাই ১১ মাসে অর্ধ শত কোটি টাকার বালু লুট জগন্নাথপুরে ৩ আসামি গ্রেফতার টাঙ্গুয়ার হাওরে গাঁজা সেবন ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, ৫ পর্যটককে কারাদন্ড মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস পালিত “মধ্যনগরে রাজহংস হাউজ বোট বিএনপি নেতার দখলে” শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ কাদাজলে নষ্ট ভাটির বন্দরের সুনাম সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার চোরাকারবারিদের কোনো ছাড় নয় : বিজিবি অধিনায়ক টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র : অবহেলায় ধ্বংসের পথে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আদারবাজারে সুপেয় পানি ও শৌচাগার সংকট ‘৩১ দফা’ বাস্তবায়নে বিএনপি নেতা অ্যাড. নূরুল ইসলামের গণসংযোগ শান্তিগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ পাঠদান ব্যাহত, নিজ ক্যাম্পাসে ইন্টার্নশিপ করতে চান শিক্ষার্থীরা আবারও ছাতক সীমান্তে ২০ জনকে পুশইন পৌর শহরে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের আহ্বান গাঁজার চালানসহ মাদক কারবারি হেলাল আটক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার, বন্দুক, পাইপগান, গুলিসহ গ্রেফতার ৪ শান্তিগঞ্জে সিএনজি ও প্রাইভেট কার সংঘর্ষে আহত ৫
জলাবদ্ধতায় নষ্ট হচ্ছে রোপণকৃত ধানের চারা, শত শত একর জমি এখনো পানির নিচে

শান্তিগঞ্জে বিলের পানিতে ফসলডুবির শঙ্কা

  • আপলোড সময় : ১২-০২-২০২৫ ০৮:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-০২-২০২৫ ০৮:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন
শান্তিগঞ্জে বিলের পানিতে ফসলডুবির শঙ্কা
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি :: শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের জামখলা হাওরের সাধারণ কৃষক মো. শাহীন মিয়া। বয়স হওয়ার পর থেকেই এই হাওরে বোরো ধানের চাষাবাদ করেন তিনি। প্রতি বছর ১৫/২০ কিয়ার (প্রতি কিয়ার ৩০ শতক) জমি চাষ করেন কৃষক শাহীন। এবছর এখনো ৭/৮ কিয়ার জমি চাষ করতে পারেননি এই কৃষক। কারণ ইউনিয়নের জামখলা হাওরে অবস্থিত বাঁচাডুবি বিল এখনো পানিতে টইটুম্বুর। ধান রোপণের সময় পার হয়ে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে বীজতলায় থাকা ধানের চারা। একই সাথে বিলে থাকা অতিরিক্ত পানিতে নষ্ট হতে বসেছে বিলের পাড়ে রোপণকৃত ধানের চারা। এতে ভীষণভাবে চিন্তিত এই কৃষক। দাবি করছেন, যত দ্রুত সম্ভব পরিমিত পানি রেখে বাঁচাডুবি বিলের অতিরিক্ত পানি যেন নিষ্কাশন করা হয়। না হলে অনাবাদি থেকে যাবে তাঁর অনেক জমি। এতে অর্থনৈতিকভাবেও মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন এই কৃষক। এই ভোগান্তির গল্প শুধু কৃষক শাহীন মিয়ার নয়, জামখলা হাওরের উত্তরে ও সলফ গ্রামের দক্ষিণে অবস্থিত বাঁচাডুবি বিলের আশপাশের শতাধিক কৃষকের। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কৃষক কামরান খান ও শাহীন মিয়া স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভোক্তভোগী অন্তত ৭০জন কৃষক। বিজ্ঞপ্তিতে কৃষকরা দাবি করেন, বাঁচাডুবি বিলে এখনো বর্ষাকালের মতো অনেক পানি রয়েছে। যে পানির নিচে তলিয়ে আছে তাদের শতাধিক একর জমি। এছাড়াও বিলে বেশি পানি থাকার কারণে ইতোমেধ্যে যে জমিগুলোতে ফসল রোপণ করা হয়েছে, জলাবদ্ধতায় সেই জমির ফসলও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এরমধ্যে যদি এই মাসের মধ্যে বৃষ্টি হয়ে যায় তাহলে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করবে। এমতাবস্থায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিলের মাঝে যতটুকু পানি (৩ ফুট পরিমাণ) রাখা যায় তা রেখে অতিরিক্ত পানি অতিদ্রুত নিষ্কাশন করা আবশ্যক। শত কৃষক পরিবারের কথা বিবেচনায় এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা। মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে বাঁচাডুবি বিলে গিয়ে দেখা যায়, পানিতে টইটুম্বুর বাঁচাডুবি বিল। চতুর্দিকে আবাদি জমি ডুবে যাচ্ছে বিলের পানিতে। এ নিয়ে কৃষকরা ভীষণ চিন্তিত। অনেক কৃষকের আবাদি জমি এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। পানি নিষ্কাশনের অপেক্ষায় শত শত কৃষকেরা। জামখলার হাওরের বাঁচাডুবি হাওরের ভোক্তভোগী কৃষক কামরান খান, শাহীন মিয়া, ইস্কন্দর আলী, হান্নান মিয়া ও নূরুল ইসলাম বলেন, বিলের পানির অবস্থা যেমন আছে এইভাবে থাকলে একটি বৃষ্টি দিলেই হাওরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে আমাদের রোপণকৃত সকল জমি নষ্ট হয়ে যাবে। তাছাড়া অনেক জমি এখনো বিলের পানির নিচে তলিয়ে আছে। জমি না ভাসলে অনেক জমিই অনাবাদি থেকে যাবে। এদিকে, বীজতলা বুনে অনেক কৃষক অপেক্ষায় আছেন কখন ভেসে উঠবে তাঁদের জমিগুলো। অপেক্ষায় নষ্ট হচ্ছে বীজতলার ধানী চারা। বাঁচাডুবি বিলের ইজারাদার দরগাপাশা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। সমিতির সভাপতি ছানু মিয়া। তিনি বলেন, আমরা তো বিলের পানি কমানোর জন্য প্রস্তুত। হাওরের কৃষক ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেছি। তাদেরও সম্মতি আছে। উপজেলা কৃষি অফিস, মৎস্য অফিস থেকেও অনুমতি আছে। ইউএনও স্যার বলছেন বাঁধ কেটে পানি নিষ্কাশন করা যাবে না। আমরা দায়িত্ব নিয়ে বাঁধ কেটে পানি বের করার পর আবার সুরক্ষিতভাবে বাঁধ বেধে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়ার পরও ইউএনও স্যার অনুমতি দিচ্ছেন না। সেচ দিয়ে এতো পানি কমানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই ইউএনও স্যারের সহযোগিতা ছাড়া পানি কমানোর কোনো সুযোগ নেই। শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। ইজারাদাররা আমার কাছে এসেছিলেন। তারা ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে পানি নিষ্কাশন করতে চাচ্ছেন। এটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। তবু আমি জেলা কমিটির সাথে কথা বলেছি। তারা এই ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। তারাই অনুমতি দিচ্ছেন না। তারপরও আমি সমিতির লোকদের বলেছি, যদি তাদের কোনো বক্তব্য থাকে তাহলে জেলা কমিটির সাথে কথা বলতে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স